হাফিজুল ইসলাম চৌধুরী :

রোজার ঈদ নিয়ে নিয়মিতই যেমন থাকে আজ’না কাল’ এমন অনিশ্চয়তা। তেমন অনিশ্চয়তা কোরবানির ঈদের ক্ষেত্রে থাকে না। কারণ জিলহজ মাসের ১০ তারিখে এই ঈদের দিনটি নির্ধারিত। তাই জিলহজের চাঁদ ওঠার আগেই ঈদের দিন ঠিক হয়ে যায়। ফলে কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে মুসলিম সম্প্রদায়ের সকল প্রস্তুতিও সম্পন্ন হয়েছে। পবিত্র হজও পালিত হয়েছে গতকাল বৃহস্পতিবার। এখন অপেক্ষা কেবল রাত পোহানোর। ভোর হলেই ১০ জিলহজ, শনিবার পবিত্র ঈদুল আজহা।

মহান আল্লাহর উদ্দেশে পশু কোরবানির মধ্য দিয়ে দেশের মুসলিম সম্প্রদায় তাঁদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা উদযাপন করবে। ঘরে ঘরে ত্যাগের আনন্দে মহিমান্বিত হবে মন।

প্রায় চার হাজার বছর আগে মহান আল্লাহর সস্তুষ্টি লাভের জন্য হযরত ইব্রাহিম (আ.) তার ছেলে হজরত ইসমাইল (আ.)-কে কোরবানি করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কিন্তু পরম করুণাময়ের অপার কুদরতে হযরত ইসমাইল (আ.)-এর পরিবর্তে একটি দুম্বা কোরবানি হয়ে যায়। হযরত ইব্রাহিম (আ.)-এর সেই ত্যাগের মহিমার কথা স্মরণ করে মুসলিম সম্প্রদায় জিলহজ মাসের ১০ তারিখে আল্লাহর অনুগ্রহ লাভের আশায় পশু কোরবানি করে থাকে। তবে ঈদের পরও দুই দিন অর্থাৎ ১১ ও ১২ জিলহজেও পশু কোরবানি করার ধর্মীয় বিধান আছে।

শনিবার সকালেই মুসল্লিরা নিকটস্থ ঈদগাহ বা মসজিদে আসবেন ঈদুল আজহার দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ আদায়ের জন্য। খতিব নামাযের খুতবায় তুলে ধরবেন কোরবানির তাৎপর্য। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ধনী-গরিব নির্বিশেষে সবাই একত্রে নামাজ আদায় করবেন। শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন কোলাকুলির মাধ্যমে। এরপর হজরত ইব্রাহিম (আ.)-এর মহান আত্মত্যাগের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে নিজের ভেতরের পশুত্বকে পরিহার করা ও আল্লাহর অনুগ্রহ লাভের আশায় পশু কোরবানি আরম্ভ হবে।

ঈদুল আজহায় পোশাক-পরিচ্ছদ ইত্যাদি কেনাকাটা গৌণ। এই ঈদের প্রস্তুতির মধ্যে প্রধান বিষয় হলো পশু ক্রয়। অবশ্য যারা ঈদের উৎসবে রাজধানী ঢাকা বা অন্য কোনো শহরের কর্মস্থল থেকে তাঁদের গ্রামের বাড়িতে ফেরেন- তাঁদের প্রস্তুতি শুরু হয় যানবাহনের টিকিট সংগ্রহ করা থেকে। এরপর যাত্রা করা। প্রিয় জনের সান্নিধ্য লাভের আনন্দ, আপন ঠিকানায় ফেরার অনুভূতির তুলনায় যাত্রার দুর্ভোগ মনে নিয়েই সপরিবারে গ্রামে ফিরে আসেন অসংখ্য মানুষ।